ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার ও কি কি? – বিস্তারিত জানুন

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার ও কি কি: অনলাইনে টাকা ইনকাম করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিংয়ের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে সুযোগ সুবিধা ও ইনকামের হার। এজন্যই আমাদের ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আমাদের কৌতুহল এর শেষ নেই।

আজকের এই অনলাইন ইনকাম বিডির আর্টিকেলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার ও কি কি (What are the types of freelancing?) এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।

তাই আগে থেকে বলে রাখছি আপনাকে, আপনার যদি হাতে সময় না থাকে তাহলে এই পোস্টটি স্কিপ করুন। হাতে সময় নিয়ে এ আর্টিকেলটি অবশ্যই পড়বেন।

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার
ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার

আশা করি আপনার ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার এই বিষয়ে একটি পরিষ্কার ধারণা পাবেন। সেজন্যে ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার বিস্তারিত জানার জন্য আপনার এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়া উচিত।

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার ও কি কি এটি জানার পূর্বে, চলুন আগে জানি ফ্রিল্যান্সিং আসলে কি?, বা ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে।

অবশ্যই পড়বেন:



ফ্রিল্যান্সিং কি? (What Is Freelancing?)

ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে অনলাইনে কোন কোম্পানির কাজ বা কারো ব্যক্তিগত কাজ আপনি আপনার নিজের জায়গায় বসে অনলাইনে সম্পন্ন করে দিয়ে অর্থ উপার্জন করাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। সহজে বললে, অনলাইনে কারো কাজ করে অর্থ নেওয়া কে ফ্রিল্যান্সিং বলে।

তো এবার চলুন আসল বিষয়ে যাই, জেনে নেই ফ্রিল্যান্সিং কাজ কত প্রকার।

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার ও কি কি? (What Are The Types of Freelancing?)

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার বলতে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজকে বুঝানো হয়। অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ কত প্রকার প্রশ্নটা এমন হবে। ফ্রিল্যান্সিং এর অনেক কাজ রয়েছে। তবে সব কাজের মধ্যে একটা বিষয় উপস্থিত সেটা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো ঘরে বসে করা যায়।

এই আর্টিকেলের মধ্যে আমি আপনার সঙ্গে ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয় এবং লাভজনক কয়েকটি কাজ নিয়ে আলোচনা করব। যে কাজগুলো আপনি ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য শিখলে বর্তমান সময় ২০২৩ সালে ফ্রিল্যান্সিং দ্বারা আপনি ভালো কিছু অর্জন করতে পারবেন অনলাইন থেকে।

জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ ২০২৩ (Freelancing Jobs)

জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো মনোযোগ সহকারে দেখুন। এবং আমি মনে করি আপনি যদি এ সকল কাজগুলো শিখেন তাহলে আপনি বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এ ভালো কিছু করা সহজ হবে।

তাই অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পোস্টে পড়ুন। এবং আপনার যে কাজটি ভালো লাগে সেই কাজটি ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য শিখুন। যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইনে টাকা ইনকাম করতে চান।

০১. এসইও এর কাজ (SEO)

এসইও হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। একটা ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপটিমাইজেশন করে সার্চ ইঞ্জিনে ভালো পজিশনে নিয়ে আসাকে এসইও (SEO) বলে। বর্তমান সময়ে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) পেশাটি অনেক দুর্দান্ত একটি অনলাইনে আয় করার পেশা।

আপনি যদি ভালোভাবে এসইও কাজটি শিখতে পারেন তাহলে আপনি অনলাইনে অনেক স্থায়ী চাকরি পাবেন। আমার পরিচিত একজন বর্তমানে ইংল্যান্ডে স্থায়ীভাবে গিয়ে এসইও কাজ করতেছে। আগে তিনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বাংলাদেশ থেকে এসইও কাজ করে দিতেন ইংল্যান্ডের একটি কোম্পানির।

এসইও কাজটি শিখলে আরেকটি সুবিধা হচ্ছে আপনি নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে কিন্তু গুগল এডসেন্স বা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

০২. গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজ (Graphic Design)

ওষুধের কভার থেকে টি শাট ডিজাইন কোথায় গ্রাফিক্সের উপস্থিতি নেই? বর্তমান সময়ে গ্রাফিক্সের ব্যবহার প্রচুর পরিমাণে হচ্ছে। সেজন্য অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা অনেক।

গ্রাফিক্স ডিজাইনের মধ্যে অনেকগুলি কাজ রয়েছে। তার মধ্যে যে কোন একটি ভালোভাবে শিখলে কিন্তু আপনি গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে। যেমন: লোগো ডিজাইন, ইউটিউব থাম্বনেইল ডিজাইন, পোস্টার ডিজাইন, টি শার্ট ডিজাইন।

তবে টি শাট ডিজাইন এবং লোগো ডিজাইন অনেক অন্যতম একটি মাধ্যম ফ্রিল্যান্সিং দ্বারা ইনকাম করার ক্ষেত্রে। আমি আপনাকে সাজেশন করব আপনি টি শার্ট ডিজাইন বা লোগো ডিজাইন এই দুটির মধ্যে একটি ভালোভাবে শিখতে পারেন।

আপনি যদি একজন ভালো মানের গ্রাফিক ডিজাইনার হতে পারেন তাহলে আপনার টাকার পেছনে ঘুরতে হবে না। টাকা আপনার পেছনে ঘুরবে। এজন্য অবশ্যই আপনাকে ভালোভাবে আগে গ্রাফিক ডিজাইন শিখে নিতে হবে তারপর ফিল্ডে নামতে হবে টাকা ইনকাম করার জন্য।

০৩. ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর কাজ (Web Design and Development)

ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে ওয়েবসাইট সম্পর্কিত কাজ। একটি ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে এটি হচ্ছে ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট বিষয়টা হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট কে ডায়নামিক করা বা ব্যবহার উপযোগী করাকে করাকে ডেভলপমেন্ট বলে।

অনলাইনে মার্কেটিং বা পরিচিত তৈরি করার জন্য ওয়েবসাইটের বিকল্প নেই। আপনার যদি একটি ফেসবুক পেজ থাকে বা ইউটিউব চ্যানেল থাকে কিন্তু ওয়েবসাইট না থাকে তাহলে কিন্তু আপনি বিশ্বস্ত হতে পারবেন না।

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ যদি মার্কেটিং নিয়ে কাজ করে থাকেন। কোন কোম্পানির ব্র্যান্ডিং তৈরি করতে ওয়েবসাইটের কোন বিকল্প নেই।

আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা ইউটিউব চ্যানেল যে কোন সময় চলে যেতে পারে কিন্তু আপনার ওয়েবসাইট সব সময় থাকবে কারণ ওয়েবসাইটটি আপনি নিজে তৈরি করবেন নিজের টাকা খরচ করে।

আপনি যদি ফ্রিল্যান্স মার্কেট গুলোতে দেখেন একজন ভালো মানের ওয়েব ডিজাইনার বা ডেভলপমেন্টের কাজের রেট কেমন তাহলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। খুব হাই ডিমান্ডে একজন ভালো মানের ওয়েব ডিজাইনার বা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজ করে থাকে। অবশ্যই ২০২৩ সালে ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ভালো একটি কাজ ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য।

০৪. ভিডিও এডিটিং (Video Editing)

বর্তমান সময়ে আপনি যদি বলেন ফ্রিল্যান্সিংয়ের কোন কাজটি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বা ইনকামের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাহলে আমি চোখ বন্ধ রেখে বলতে পারব ভিডিও এডিটিং। বর্তমান সময়ে ভিডিও এডিটিং এর চাহিদা অনেক বেশি।

কেননা অনলাইন মার্কেটিং করতে গেলে অবশ্যই ভিডিও এডিটিং এর প্রয়োজন হয়। কারণ মার্কেটিং ভিডিও ছাড়া বর্তমানে কল্পনা করা যায় না। ভিডিওর মাধ্যমে মার্কেটিং করলে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়।

ভিডিও এডিটিং এর চাহিদা বাড়ার পেছনে আরো একটি কারণ রয়েছে। কারণটি হচ্ছে শর্ট ভিডিও। ফেসবুক ইউটিউব এর শর্ট ভিডিও প্রচুর পরিমাণে আপলোড হয়ে থাকে। এর জন্য ভিডিও এডিটরের প্রয়োজন হয়।

আমি কিছুদিন আগে দেখেছি, বাংলাদেশের এক যুবক শুধুমাত্র ভিডিও এডিটিং করে মাসে ৫ লক্ষ অধিক টাকা ইনকাম করতেছে। সে সবচেয়ে বেশি শর্ট ভিডিও এডিটিং করে থাকে। সে বর্তমানে একটি ভিডিও এডিটিং এর এজেন্সি তৈরি করে ফেলেছে।

তাহলে বুঝতে পেরেছেন যে ভিডিও এডিটিং এর মূল্য বর্তমানে কতটুকু। আপনি কিন্তু ভিডিও এডিটিং ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারেন। কেননা অনলাইন মার্কেটে প্রচুর পরিমাণ চাহিদা রয়েছে একজন দক্ষ ভিডিও এডিটরের।

৫. আর্টিকেল রাইটিং এর কাজ (Article Writter)

আর্টিকেল রাইটিং এর কাজটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুলোতে করে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। আর্টিকেল রাইটিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে এসেও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল/কনটেন্ট লিখে দিতে হবে।

আপনি যদি ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে পারেন তাহলে আপনার ফ্রিল্যান্স মার্কেট গুলোতে কাজের অভাব হবে না। কেননা একজন ভালো মানের আর্টিকেল রাইটার এর কাছ থেকে আর্টিকেল নিতে পারলে আর্টিকেল দিয়ে প্রচুর পরিমাণে লাভবান হওয়া যায়।

আরেকটা বিষয় সত্য যে, অনলাইনে ভালো মানের ফ্রিল্যান্সার রাইটার খুবই কম পাওয়া যায়। একজন ভালো মানের আর্টিকেল রাইটার পাওয়া সত্যি কপালের বিষয়। এ বিষয়টা আমি খুব ভালোভাবে জানি কেননা আমি অনেক আর্টিকেল রাইটার নিয়ে কাজ করেছি।

আপনাকে আমি এটি নিশ্চিত দিয়ে বলতে পারি, আপনি যদি ভালো মানের আর্টিকেল রাইটার হতে পারেন। তাহলে আপনি অন্যকে আর্টিকেল লিখে ভালো পরিমান অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি নিজস্ব ব্লগ সাইট তৈরি করে সেখানে আর্টিকেল পাবলিশ করে ভালো পরিমান অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

৬. ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট (Virtual Asisstant)

অনলাইনে অন্যের সহযোগী হিসেবে কাজ করাকে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট বলে। অনলাইনে এই ব্যস্ত দুনিয়ায় উন্নত দেশগুলোতে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর বিশাল চাহিদা রয়েছে। আপনি এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।

আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুলোতে গিয়ে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট কাজে বিট করতে পারেন। তবে অবশ্যই আপনাকে দক্ষ হতে হবে আপনি যে কাজ ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে করতে চান।

০৭. ট্রান্সলেটর (Translator)

ট্রান্সলেটর কাজটা হচ্ছে একটা ভাষা থেকে আরেকটি ভাষা তে অনুবাদ করে দেওয়া। আপনি যদি কোন ভাষাতে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। এবং নির্ভুল অনুবাদ করতে পারেন। তাহলে কিন্তু আপনার অনুবাদ তাকে কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আপনার কাছে মনে হতে পারে যে অনুবাদ করার মাধ্যমে কি টাকা ইনকাম করা সম্ভব! কিন্তু বিষয়টা কিন্তু অনেক গুরুতর। কেননা আমি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুলোতে দেখেছি যারা টপ রেটেড ট্রান্সলেটর তারা ফ্রিল্যান্স মার্কেট গুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করতেছে।

আপনার যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে ফিন্যান্স মার্কেটগুলোতে গিয়ে ট্রান্সলেটর ফ্রিল্যান্সারদের ইনকাম একটু দেখবেন। আমার কথা যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে দেখলে অবশ্যই বিশ্বাস হবে।

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার শেষ কথা,

আশা করি ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার ও কি কি আমি আপনাকে ভালোভাবে বুঝাতে পেরেছি। আপনি কি যদি আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি ফ্রিল্যান্সিং কি সম্পর্কে ভালোভাবে বোঝাতে পারি তবে আমি স্বার্থক।

আপনার যদি কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে আমাদের ওয়েবসাইট বা এই আর্টিকেল সম্পর্কে। তাহলে নির্দ্বিধায় আপনি অবশ্যই কমেন্ট করে আমাকে জানাবেন। এছাড়াও আপনার মতামত ব্যক্ত করে যাতে পারেন আমাদেরকে কমেন্ট করে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top